সিঙ্গাপুর, মে ০৪ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/রয়টার্স)- নিরস্ত্র অবস্থায় ওসামা বিন লাদেনকে গুলি করে হত্যা করে যুক্তরাষ্ট্র বাড়াবাড়ি করে ফেলেছে কি-না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
বিশ্বের মোস্ট ওয়ান্টেড একজনকে মেরে ফেলাটা সুসংবাদ এবং নানা যুক্তিতে তা যুক্তরাষ্ট্রের অধিকারের পর্যায়ে পড়লেও নিরস্ত্র অবস্থায় তাকে গুলি করাটা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন কিনা প্রশ্ন সেটিই।
পশ্চিম জার্মানির সাবেক চ্যান্সেলর হেলমুট স্মিট জার্মান টেলিভিশনে বলেন, "এটি স্পষ্টতই আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন।"
অস্ট্রেলিয়ার মানবাধিকারকর্মী জিওফ্রে রবার্টসনও একই মত প্রকাশ করেছেন।
অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন টেলিভিশনে তিনি বলেন, "এটি ন্যায়বিচার নয়। এটি ন্যায়বিচার শব্দটির বিকৃতি। ন্যায়বিচার বলতে বোঝায় অভিযুক্তকে আদালতের মুখোমুখি করা, তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে তাকে দোষী সাব্যস্ত করা এবং সাজা দেওয়া।"
বিন লাদেনকে বিনা বিচারে হত্যা করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
রাবর্টসন আরো বলেন, নুরেমবার্গে যেভাবে নাৎসী বাহিনীর সদস্যদের বিচার হয়েছে, হেগের যুদ্ধাপরাধ আদালতে যেভাবে যুগোস্লাভিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট স্লোবোদান মিলোসেভিচের বিচার হয়েছে তেমনি বিন লাদেনেরও বিচার হতে পারতো।
তবে হোয়াইট হাউস বলছে, বিন লাদেন মার্কিন বাহিনীকে প্রতিরোধের চেষ্টা করেছিলেন এবং তাকে আটক করার চেষ্টা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা ছিলো।
তবে বিন লাদেন কি ধরনের প্রতিরোধের চেষ্টা নিয়েছিলেন সে সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কিছু বলেন নি হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জে কার্নি।
তিনি কেবল বলেন, আমরা বড় ধরনের প্রতিরোধের আশঙ্কা করেছিলাম। সেরকমটিই হয়েছে। ওই কম্পাউন্ডে বহু সশস্ত্র লোক ছিলো।
কিন্তু দুপক্ষে লড়াই, গোলাগুলি চললেও বিন লাদেনকে গুলি করার সময়টিতে তিনি নিরস্ত্র ছিলেন। নিরস্ত্র অবস্থায় থাকার পরও তাকে জীবিত না ধরে হত্যা কেনো করা হলো তার কোনো সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে পারেননি মার্কিন কর্মকর্তারা।
আর এ থেকেই মার্কিন কমান্ডোদেরকে হত্যার নির্দেশ দিয়ে সেখানো পাঠানো হয়েছিলো কি না তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে।
ডাচ-ভিত্তিক আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞ গার্ট-জান নুপস বলেছেন, বিন লাদেনকে গ্রেপ্তার করা এবং যুক্তরাষ্ট্রে হস্তান্তর করা উচিত ছিলো।
নয়া দিল্লির ইসলাম ধর্মীয় নেতা সৈয়দ আহমেদ বুখারিও বলেন, বিন লাদেনকে সহজেই আটক করতে পারতো যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী।
যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করে তিনি বলেন, "আমেরিকা সব জায়গায় বুনো শাসন চালু করছে। আফগানিস্তান, ইরাক, পাকিস্তান, লিবিয়া-সর্বত্র চলছে আমেরিকার এ তৎপরতা। মানুষ দীর্ঘদিন নীরব রয়েছে। কিন্তু এখন তা সীমা ছাড়িয়ে গেছে।"
তবে কয়েকজন ইসলাম ধর্মীয় নেতার কাছে বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে বিন লাদেনের মরদেহ সাগরে 'সমাহিত' করা ইসলামিক বিধিসম্মত কিনা সে বিষয়টি।
পাকিস্তানের মানবাধিকার কমিশনের কর্মকর্তা আইএ রেহমান বলেন, "নিরস্ত্র অবস্থায় বিন লাদেন মারা গেছেন- এটা বড় কথা নয়। তাকে মুসলিম রীতি মেনে সমাহিত করা হয়েছে কিনা সেটাই বড় কথা।"
সৌদি রয়েল কোর্টের উপদেষ্টা শেখ আব্দুল মোহসেন আল-ওবাইকান বলেন, "এটি মুসলিম রীতি নয়। ইসলামি রীতিতে অন্য সবার মতো তাকেও মাটিতে কবর দেওয়া উচিত ছিলো।"
ইন্দোনেশিয়ার উলেমা কাউন্সিলের (এমইউআই) সদস্য আমিধান বলেন, "বিশেষ পরিস্থিতিতে কাউকে সাগরে কাউকে সমাহিত করা যায়। এক্ষেত্রে কি তা ছিলো?"
স্থানীয় সময় সোমবার ভোররাতে পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদ শহরের এক কম্পাউন্ডে অভিযান চালিয়ে বিন লাদেনকে হত্যা করে মার্কিন সেনাবাহিনী।
সকালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা টেলিভিশন ভাষণে লাদেনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন।
পরবর্তীতে বিন লাদেনকে আরব সাগরে সমাহিত করা হয়েছে বলে জানান মার্কিন কর্মকর্তারা।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এএইচ/এলকিউ/২১০৬ঘ.
বিশ্বের মোস্ট ওয়ান্টেড একজনকে মেরে ফেলাটা সুসংবাদ এবং নানা যুক্তিতে তা যুক্তরাষ্ট্রের অধিকারের পর্যায়ে পড়লেও নিরস্ত্র অবস্থায় তাকে গুলি করাটা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন কিনা প্রশ্ন সেটিই।
পশ্চিম জার্মানির সাবেক চ্যান্সেলর হেলমুট স্মিট জার্মান টেলিভিশনে বলেন, "এটি স্পষ্টতই আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন।"
অস্ট্রেলিয়ার মানবাধিকারকর্মী জিওফ্রে রবার্টসনও একই মত প্রকাশ করেছেন।
অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন টেলিভিশনে তিনি বলেন, "এটি ন্যায়বিচার নয়। এটি ন্যায়বিচার শব্দটির বিকৃতি। ন্যায়বিচার বলতে বোঝায় অভিযুক্তকে আদালতের মুখোমুখি করা, তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে তাকে দোষী সাব্যস্ত করা এবং সাজা দেওয়া।"
বিন লাদেনকে বিনা বিচারে হত্যা করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
রাবর্টসন আরো বলেন, নুরেমবার্গে যেভাবে নাৎসী বাহিনীর সদস্যদের বিচার হয়েছে, হেগের যুদ্ধাপরাধ আদালতে যেভাবে যুগোস্লাভিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট স্লোবোদান মিলোসেভিচের বিচার হয়েছে তেমনি বিন লাদেনেরও বিচার হতে পারতো।
তবে হোয়াইট হাউস বলছে, বিন লাদেন মার্কিন বাহিনীকে প্রতিরোধের চেষ্টা করেছিলেন এবং তাকে আটক করার চেষ্টা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা ছিলো।
তবে বিন লাদেন কি ধরনের প্রতিরোধের চেষ্টা নিয়েছিলেন সে সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কিছু বলেন নি হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জে কার্নি।
তিনি কেবল বলেন, আমরা বড় ধরনের প্রতিরোধের আশঙ্কা করেছিলাম। সেরকমটিই হয়েছে। ওই কম্পাউন্ডে বহু সশস্ত্র লোক ছিলো।
কিন্তু দুপক্ষে লড়াই, গোলাগুলি চললেও বিন লাদেনকে গুলি করার সময়টিতে তিনি নিরস্ত্র ছিলেন। নিরস্ত্র অবস্থায় থাকার পরও তাকে জীবিত না ধরে হত্যা কেনো করা হলো তার কোনো সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে পারেননি মার্কিন কর্মকর্তারা।
আর এ থেকেই মার্কিন কমান্ডোদেরকে হত্যার নির্দেশ দিয়ে সেখানো পাঠানো হয়েছিলো কি না তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে।
ডাচ-ভিত্তিক আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞ গার্ট-জান নুপস বলেছেন, বিন লাদেনকে গ্রেপ্তার করা এবং যুক্তরাষ্ট্রে হস্তান্তর করা উচিত ছিলো।
নয়া দিল্লির ইসলাম ধর্মীয় নেতা সৈয়দ আহমেদ বুখারিও বলেন, বিন লাদেনকে সহজেই আটক করতে পারতো যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী।
যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করে তিনি বলেন, "আমেরিকা সব জায়গায় বুনো শাসন চালু করছে। আফগানিস্তান, ইরাক, পাকিস্তান, লিবিয়া-সর্বত্র চলছে আমেরিকার এ তৎপরতা। মানুষ দীর্ঘদিন নীরব রয়েছে। কিন্তু এখন তা সীমা ছাড়িয়ে গেছে।"
তবে কয়েকজন ইসলাম ধর্মীয় নেতার কাছে বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে বিন লাদেনের মরদেহ সাগরে 'সমাহিত' করা ইসলামিক বিধিসম্মত কিনা সে বিষয়টি।
পাকিস্তানের মানবাধিকার কমিশনের কর্মকর্তা আইএ রেহমান বলেন, "নিরস্ত্র অবস্থায় বিন লাদেন মারা গেছেন- এটা বড় কথা নয়। তাকে মুসলিম রীতি মেনে সমাহিত করা হয়েছে কিনা সেটাই বড় কথা।"
সৌদি রয়েল কোর্টের উপদেষ্টা শেখ আব্দুল মোহসেন আল-ওবাইকান বলেন, "এটি মুসলিম রীতি নয়। ইসলামি রীতিতে অন্য সবার মতো তাকেও মাটিতে কবর দেওয়া উচিত ছিলো।"
ইন্দোনেশিয়ার উলেমা কাউন্সিলের (এমইউআই) সদস্য আমিধান বলেন, "বিশেষ পরিস্থিতিতে কাউকে সাগরে কাউকে সমাহিত করা যায়। এক্ষেত্রে কি তা ছিলো?"
স্থানীয় সময় সোমবার ভোররাতে পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদ শহরের এক কম্পাউন্ডে অভিযান চালিয়ে বিন লাদেনকে হত্যা করে মার্কিন সেনাবাহিনী।
সকালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা টেলিভিশন ভাষণে লাদেনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন।
পরবর্তীতে বিন লাদেনকে আরব সাগরে সমাহিত করা হয়েছে বলে জানান মার্কিন কর্মকর্তারা।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এএইচ/এলকিউ/২১০৬ঘ.
No comments:
Post a Comment