CRICKET LIVE STREAMING

Sunday, March 20, 2011

শেষ হলো অজিদের রূপকথার গল্প

অবশেষে থেমে গেল বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার রূপকথার গল্প। সেই যে রূপকথায় আছে না, রাজপুত্র চলেছে...চলেছে...চলেছে...কোত্থাও থামছে না—সে রকম অনেকটা। ১৯৯৯ সাল থেকে বিশ্বকাপের একটি ম্যাচেও না হেরে তিন তিনবার ট্রফি জিতে নিয়ে গেল নিজেদের ঘরে ওই অজিরা। কেউ তাদের গায়ে একটা ফুলের টোকাও দিতে পারল না। চতুর্থবারও সে উদ্দেশ্যে উপমহাদেশে আগমন পন্টিংদের। গ্রু্রপ পর্বের প্রথম পাঁচটি ম্যাচের একটিতেও না হেরে শেষ ম্যাচ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে খেলতে গিয়ে হেরে গেল ৪ উইকেটে। অর্থাত্ টানা ৩৪ ম্যাচ জিতে ৩৫তম ম্যাচটিতে এসে নিজেদের ফের মাটিতে আবিষ্কার করল বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।
চলতি বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচটা জিম্বাবুয়েকে দিয়েই শুরু করেছিলেন পন্টিংরা। ম্যাচের শুরুতেই অজি ব্যাটসম্যানদের দুর্বলতা ধরা পড়ে গিয়েছিল। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শেষ পর্যন্ত ২৯২ তুললেও ১৮ ওভার পর্যন্ত রান রেট ছিল ওভারপ্রতি মাত্র ৩-এর আশপাশে। অ্যাশেজে হারের পর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৬-১ ম্যাচে সিরিজ জিতে নিজেদের দুর্ধর্ষ প্রতিপন্ন অবশ্য করেই ছিল। কিন্তু বিশ্বকাপে নিজেদের চেয়ে কম শক্তির দলগুলোর সামনে বাঘ হয়ে দাঁড়ালেও সমশক্তির পাকিস্তানের কাছে ঠিকই ধরা খেয়ে গেল। অবশ্য কলম্বোয় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচটা বৃষ্টিতে ধুয়ে না গেলে ধরা খাওয়ার ব্যাপারটা ঘটত আরও দুই ম্যাচ আগেই।
অ্যাডাম গিলক্রিস্ট, ম্যাথু হেডেন, মার্ক ও স্টিভ ওয়া, শেন ওয়ার্ন, গ্লেন ম্যাকগ্রা...মনে হয়, একেকটা নক্ষত্রের মতো উজ্জ্বল নাম ছিল অজি ক্রিকেটাকাশে। আজ অস্তমিত সেসব তারার ঝিলিক অজি সমর্থকদের চোখে শুধুই নস্টালজিক বিবর্ণতা। পন্টিংদের সে অতিমানবীয় প্রোফাইল এখন আর দশটা ক্রিকেট খেলুড়ে দেশের পর্যায়ে। ১৯৯৯ সাল থেকে শুরু হয়েছিল যে অপরাজেয় অভিযাত্রা, গত পরশু কলম্বোয় ৪ উইকেটের হার দিয়ে ঘটল তার পরিসমাপ্তি।
একনজরে অস্ট্রেলিয়ার টানা ৩৪টি জয়ের বিশ্বকাপ ম্যাচ
বিশ্বকাপ ১৯৯৯ : ১. বাংলাদেশের বিপক্ষে ৭ উইকেটে জয় (২৭ মে) ২. ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৬ উইকেটে জয় (৩০ মে) ৩. ভারতের বিপক্ষে ৭৭ রানের জয় (৪ জুন) ৪. জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৪৪ রানের জয় (৯ জুন) ৫. দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৫ উইকেটে জয় (১৩ জুন) ৬. দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচ টাই (১৭ জুন) ৭. পাকিস্তানের বিপক্ষে ফাইনালে ৮ উইকেটে জিতে বিশ্বকাপ ট্রফি জয় (২০ জুন)।
বিশ্বকাপ ২০০৩ : ৮. পাকিস্তানের বিপক্ষে ৮২ রানের জয় (১১ ফেব্রুয়ারি) ৯. ভারতের বিপক্ষে ৯ উইকেটে জয় (১৫ ফেব্রুয়ারি) ১০. নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে ৭৫ রানের জয় (২০ ফেব্রুয়ারি) ১১. জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সাত উইকেটে জয় (২৪ ফেব্রুয়ারি) ১২. নামিবিয়ার বিপক্ষে ২৫৬ রানের জয় (২৭ ফেব্রুয়ারি) ১৩. ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২ উইকেটে জয় (২ মার্চ) ১৪. শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৯৬ রানের জয় (৭ মার্চ) ১৫. নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৬ উইকেটে জয় (১১ মার্চ) ১৬. কেনিয়ার বিপক্ষে ৫ উইকেটে জয় (১৫ মার্চ) ১৭. শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৪৮ রানের জয় (১৮ মার্চ) ১৮. ভারতের বিপক্ষে ফাইনালে ১২৫ রানে জিতে বিশ্বকাপ ট্রফি জয় (২৩ মার্চ)।
বিশ্বকাপ ২০০৭ : ১৯. স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ২০৩ রানের জয় (১৪ মার্চ) ২০. নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে ২২৯ রানের জয় (১৬ মার্চ) ২১. দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৮৩ রানের জয় (২৪ মার্চ) ২২. ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১০৩ রানের জয় (২৭-২৮ মার্চ) ২৩. বাংলাদেশের বিপক্ষে ১০ উইকেটে জয় (৩১ মার্চ) ২৪. ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৭ উইকেটে জয় (৮ এপ্রিল) ২৫. আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৯ উইকেটে জয় (১৩ এপ্রিল) ২৬. শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ৭ উইকেটে জয় (১৬ এপ্রিল) ২৭. নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২১৫ রানের জয় (২০ এপ্রিল) ২৮. দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৭ উইকেটে জয় (২৫ এপ্রিল) ২৯. ফাইনালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ডাক/লুইস পদ্ধতিতে ৫৩ রানে জিতে বিশ্বকাপ ট্রফি জয় (২৮ এপ্রিল)।
বিশ্বকাপ ২০১১ : ৩০. জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৯১ রানের জয় (২১ ফেব্রুয়ারি) ৩১. নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৭ উইকেটে জয় (২৫ ফেব্রুয়ারি) ৩২. শ্রলীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচ পরিত্যক্ত (৫ মার্চ) ৩৩. কেনিয়ার রিরুদ্ধে ৬০ রানের জয় (১৩ মার্চ) ৩৪. কানাডার বিপক্ষে ৭ উইকেটে জয় (১৬ মার্চ)।
১৯ মার্চ পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩৫তম ম্যাচ খেলতে গিয়ে কলম্বোয় ধরাশায়ী হলেন পন্টিংরা। আর ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপ থেকে শুরু হওয়া টানা জয়ের প্রথম ম্যাচ থেকে শুরু করে হারের এই প্রথম ম্যাচটি পর্যন্ত প্রতিটি ম্যাচই খেলেছেন ২০০৩ সাল থেকে এখনো পর্যন্ত অধিনায়ক রিকি পন্টিং।

No comments:

Post a Comment

kazi-music