পাকিস্তানের বহুল আলোচিত ও সমালোচিত পেসার স্পিড স্টার সোয়েব আকতার তার ক্রিকেট ক্যারিয়ারের ইতি টানলেন। অর্থাত্ এই বিশ্বকাপের পর আর তাকে মাঠে দেখা যাবে না, দেখা যাবে না তার গতিময় বলের ঝলকানি। পড়তে হবে না কোনো সমালোচনার মুখে। রাওয়াল পিণ্ডি এক্সপ্রেস-খ্যাত এই পেসার এরই মধ্যে ক্যারিয়ারের ১৩টি বছর পার করে দিলেন। এই দীর্ঘ তেরো বছরে তিনি আন্তর্জাতিক ওডিআই ম্যাচ খেলেছেন মাত্র ১৬৩টি আর টেস্ট খেলেছেন মাত্র ৪৬টি। ১৬৩টি ওডিআই ম্যাচ থেকে উইকেট নিয়েছেন ২৪৭টি। আর ৪৬টি টেস্ট থেকে উইকেট নিয়েছেন ১৭৮টি। রাওয়াল পিণ্ডি এক্সপ্রেস-খ্যাত সোয়েব আকতারের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় ১৯৯৭ সালে নিজ শহর রাওয়াল পিণ্ডিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। তখন দলের অধিনায়ক ছিলেন আরেক কিংবদন্তি বোলার ওয়াসিম আকরাম।
সোয়েব প্রথম বিশ্বকাপ খেলেন ১৯৯৯ সালে সপ্তম বিশ্বকাপ ইংল্যান্ডে। এই বিশ্বকাপেই সোয়েব সবার নজরে আসেন। কোনো ব্যাটসম্যানই তার জন্য খেলতে পারছিলেন না তখন। সোয়েব বিশ্বকাপটিতে মোট উইকেট নেন ১৬টি। আর তার বোলিং নৈপুণ্যের ওপরই ভর করে পাকিস্তান ’৯৯-এর বিশ্বকাপে ফাইনালে ওঠে। এর পর থেকে সোয়েবকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। উদ্যমের সঙ্গে শুধু সামনে এগিয়েছেন। সোয়েব তখনই ১০০ মাইল বেগে বল করে রেকর্ড গড়েন। এ রেকর্ড আজ অবধি কেউ স্পর্শ করতে পারেননি। তাছাড়া এই গতির রাজা সোয়েব বিভিন্ন সময় দলকে একাই জয়ের রথ দেখিয়েছেন। ফিরে তাকানো যাক টেস্ট ও ওয়ানডেতে সোয়েবের ক্যারিয়ার সেরা কয়েকটি ম্যাচের দিকে। ১৯৯৯ সালে এশিয়ান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতের বিরুদ্ধে ৭১ রানে চার উইকেট। ওই টেস্ট সিরিজে কলকাতার ইডেন গার্ডেনে দর্শকদের উপচেপড়া ভিড় ছিল। ভারত প্রায় জয়ের দ্বারপ্রান্তে চলে গিয়েছিল। বল হাতে নিলেন সোয়েব আকতার। পরপর দুই বণে আউট করে দিলেন রাহুল দ্রাবিড়কে ও ক্রিকেট বরপুত্র শচীন টেন্ডুলকারকে। ওই টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি চারটি উইকেট নিয়ে দলকে জয় এনে দেন।
’৯৯-এর বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৫৫ রানে ৫ উইকেট
সোয়েব আকতারের প্রথম বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের এ ম্যাচটিতে সোয়েব তার বলের বেগ দেখিয়েছিলেন। প্রত্যেকটি বল তিনি ৯০ মাইল বেগে ছাড়ছিলেন। ম্যাচটিতে তার অগ্নিময় বলের প্রথম শিকার হন নাথান অ্যাস্টল, দ্বিতীয় শিকার হন স্টিফেন ফ্লেমিং এবং তৃতীয় শিকার হন ক্রিস হেরিস। ফলে নিউজিল্যান্ডের রান ৭ উইকেটে ২৪১ রানে গিয়ে থেমে পড়ে। ফলে ম্যাচটি জিততে পাকিস্তানের কোনো বেগ পেতে হয়নি। লাহোর টেস্টে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ১১ রানে ৬ উইকেট টেস্ট ক্যারিয়ারে এই ম্যাচটিই তার সেরা পারফরম্যান্স। কিউইরা ব্যাট করতে নেমে ৬৪৩ রানের এক রানের পাহাড় দাঁড় করিয়ে দেয় পাকিস্তানের জন্য। ফলে প্রথম ইনিংসে এ রান তাড়া করতে গিয়ে কিছুটা হিমশিম খেতে হয় পাকিস্তানকে।
দ্বিতীয় ইনিংস সোয়েব কিউইদের বিরুদ্ধে বলহাতে জ্বলে ওঠেন। মাত্র ১১ রান দিয়ে ছয়-ছয়টি উইকেট তুলে নেন তিনি। ফলে ২য় ইনিংসে মাত্র ৭৩ রানে কিউইদের ইনিংস গুটিয়ে যায়। ফলে হাতছাড়া ম্যাচটিতে সোয়েব আকতারের জন্য জয় পায় পাকিস্তান।
২০০২ সালে ব্রিজবেনে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ২৫ রানের ৫ উইকেট
এই ম্যাচটি সোয়েবের ওজিআই ক্যারিয়ারে অন্যতম সেরা একটি ম্যাচ। ওই দিন ড্যারেন লেহমান, মাইকেল ভেবান ও রিকি পন্টিংয়ের মতো ব্যাটসম্যানরা সোয়েব আকতারের বোলের গতি সম্পর্কে টের পেয়েছিলেন। অনেকটা অসহায়ের মতো তারা সোয়েবের গতির কাছে আত্মসমর্পণ করেছিলেন। ফলে মাত্র ৯১ রানে গুটিয়ে যায় অজিদের ইনিংস।
ওই সফরেই অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে এক টেস্ট ম্যাচে সোয়েব মাত্র ২৫ রানে নিয়েছিলেন ৫ উইকেট।
২০০৩ সালে ওয়েলিংটনে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৩০ রানে ৬ উইকেট
সোয়েব আকতার নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে সব সময়ই মনে হয় ভালো করতেন। কেবল ব্যতিক্রম হলো এবারের বিশ্বকাপে তাদের গ্রুপ পর্যায়ের পঞ্চম ম্যাচটি। ম্যাচটিতে সোয়েব কোনো সফলতাই দেখাতে পারেননি। যা হোক, ২০০৩ সালের ওয়েলিংটনে এক টেস্ট ম্যাচে সোয়েব আকতার নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে পুরোদমে এক যমে পরিণত হয়েছিলেন কিউইদের জন্য।
মাত্র ৩০ রানে তিনি ঐ টেস্ট ম্যাচটিতে নিয়েছিলেন ছয়-ছয়টি উইকেট। ফলে অসহায়ের মতো করে পরাজয় বরণ করতে হয় পাকিস্তানের কাছে। এসব ম্যাচ ছাড়াও সোয়েবের আরও অনেক স্মরণীয় ম্যাচ আছে।
উল্লেখ্য, সোয়েব আকতারের টেস্ট ক্যারিয়ার শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত পাকিস্তান ১১৫টি টেস্ট খেলেছে। সোয়েবের অংশগ্রহণে খেলা হয়েছে ৪৬টি টেস্ট। এর মধ্যে দল জয় পেয়েছে ২০টি টেস্ট ম্যাচে এবং হেরেছে ১৬টি টেস্ট ম্যাচে। সোয়েবের অংশগ্রহণ ছাড়া দল ১৯৯৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত টেস্ট ম্যাচ খেলেছে ৬৯টি। এর মধ্যে হেরেছে ২৮টি টেস্ট ম্যাচে এবং জয় পেয়েছে ২০টি টেস্ট ম্যাচে।
সুতরাং পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে সোয়েব দলে কত প্রয়োজনীয় পেসার।
১৪ বছরের ক্যারিয়ারে সোয়েব অধিকাংশ সময়ই ইনজুরিতে আক্রান্ত ছিলেন। তাছাড়া বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অভিযোগে তিনি অভিযুক্ত হন। ফলে থাকতে হয়েছে দলের বাইরে। বিশ্বকাপের পর থেকে তাকে হয়তো আর কোনো অভিযোগ তাড়িয়ে বেড়াবে না। ক্রিকেট বিশ্বে শেষ হবে সোয়েব নামের এক ঝলসানো গতির অধ্যায়ের।
সোয়েব প্রথম বিশ্বকাপ খেলেন ১৯৯৯ সালে সপ্তম বিশ্বকাপ ইংল্যান্ডে। এই বিশ্বকাপেই সোয়েব সবার নজরে আসেন। কোনো ব্যাটসম্যানই তার জন্য খেলতে পারছিলেন না তখন। সোয়েব বিশ্বকাপটিতে মোট উইকেট নেন ১৬টি। আর তার বোলিং নৈপুণ্যের ওপরই ভর করে পাকিস্তান ’৯৯-এর বিশ্বকাপে ফাইনালে ওঠে। এর পর থেকে সোয়েবকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। উদ্যমের সঙ্গে শুধু সামনে এগিয়েছেন। সোয়েব তখনই ১০০ মাইল বেগে বল করে রেকর্ড গড়েন। এ রেকর্ড আজ অবধি কেউ স্পর্শ করতে পারেননি। তাছাড়া এই গতির রাজা সোয়েব বিভিন্ন সময় দলকে একাই জয়ের রথ দেখিয়েছেন। ফিরে তাকানো যাক টেস্ট ও ওয়ানডেতে সোয়েবের ক্যারিয়ার সেরা কয়েকটি ম্যাচের দিকে। ১৯৯৯ সালে এশিয়ান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতের বিরুদ্ধে ৭১ রানে চার উইকেট। ওই টেস্ট সিরিজে কলকাতার ইডেন গার্ডেনে দর্শকদের উপচেপড়া ভিড় ছিল। ভারত প্রায় জয়ের দ্বারপ্রান্তে চলে গিয়েছিল। বল হাতে নিলেন সোয়েব আকতার। পরপর দুই বণে আউট করে দিলেন রাহুল দ্রাবিড়কে ও ক্রিকেট বরপুত্র শচীন টেন্ডুলকারকে। ওই টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি চারটি উইকেট নিয়ে দলকে জয় এনে দেন।
’৯৯-এর বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৫৫ রানে ৫ উইকেট
সোয়েব আকতারের প্রথম বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের এ ম্যাচটিতে সোয়েব তার বলের বেগ দেখিয়েছিলেন। প্রত্যেকটি বল তিনি ৯০ মাইল বেগে ছাড়ছিলেন। ম্যাচটিতে তার অগ্নিময় বলের প্রথম শিকার হন নাথান অ্যাস্টল, দ্বিতীয় শিকার হন স্টিফেন ফ্লেমিং এবং তৃতীয় শিকার হন ক্রিস হেরিস। ফলে নিউজিল্যান্ডের রান ৭ উইকেটে ২৪১ রানে গিয়ে থেমে পড়ে। ফলে ম্যাচটি জিততে পাকিস্তানের কোনো বেগ পেতে হয়নি। লাহোর টেস্টে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ১১ রানে ৬ উইকেট টেস্ট ক্যারিয়ারে এই ম্যাচটিই তার সেরা পারফরম্যান্স। কিউইরা ব্যাট করতে নেমে ৬৪৩ রানের এক রানের পাহাড় দাঁড় করিয়ে দেয় পাকিস্তানের জন্য। ফলে প্রথম ইনিংসে এ রান তাড়া করতে গিয়ে কিছুটা হিমশিম খেতে হয় পাকিস্তানকে।
দ্বিতীয় ইনিংস সোয়েব কিউইদের বিরুদ্ধে বলহাতে জ্বলে ওঠেন। মাত্র ১১ রান দিয়ে ছয়-ছয়টি উইকেট তুলে নেন তিনি। ফলে ২য় ইনিংসে মাত্র ৭৩ রানে কিউইদের ইনিংস গুটিয়ে যায়। ফলে হাতছাড়া ম্যাচটিতে সোয়েব আকতারের জন্য জয় পায় পাকিস্তান।
২০০২ সালে ব্রিজবেনে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ২৫ রানের ৫ উইকেট
এই ম্যাচটি সোয়েবের ওজিআই ক্যারিয়ারে অন্যতম সেরা একটি ম্যাচ। ওই দিন ড্যারেন লেহমান, মাইকেল ভেবান ও রিকি পন্টিংয়ের মতো ব্যাটসম্যানরা সোয়েব আকতারের বোলের গতি সম্পর্কে টের পেয়েছিলেন। অনেকটা অসহায়ের মতো তারা সোয়েবের গতির কাছে আত্মসমর্পণ করেছিলেন। ফলে মাত্র ৯১ রানে গুটিয়ে যায় অজিদের ইনিংস।
ওই সফরেই অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে এক টেস্ট ম্যাচে সোয়েব মাত্র ২৫ রানে নিয়েছিলেন ৫ উইকেট।
২০০৩ সালে ওয়েলিংটনে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৩০ রানে ৬ উইকেট
সোয়েব আকতার নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে সব সময়ই মনে হয় ভালো করতেন। কেবল ব্যতিক্রম হলো এবারের বিশ্বকাপে তাদের গ্রুপ পর্যায়ের পঞ্চম ম্যাচটি। ম্যাচটিতে সোয়েব কোনো সফলতাই দেখাতে পারেননি। যা হোক, ২০০৩ সালের ওয়েলিংটনে এক টেস্ট ম্যাচে সোয়েব আকতার নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে পুরোদমে এক যমে পরিণত হয়েছিলেন কিউইদের জন্য।
মাত্র ৩০ রানে তিনি ঐ টেস্ট ম্যাচটিতে নিয়েছিলেন ছয়-ছয়টি উইকেট। ফলে অসহায়ের মতো করে পরাজয় বরণ করতে হয় পাকিস্তানের কাছে। এসব ম্যাচ ছাড়াও সোয়েবের আরও অনেক স্মরণীয় ম্যাচ আছে।
উল্লেখ্য, সোয়েব আকতারের টেস্ট ক্যারিয়ার শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত পাকিস্তান ১১৫টি টেস্ট খেলেছে। সোয়েবের অংশগ্রহণে খেলা হয়েছে ৪৬টি টেস্ট। এর মধ্যে দল জয় পেয়েছে ২০টি টেস্ট ম্যাচে এবং হেরেছে ১৬টি টেস্ট ম্যাচে। সোয়েবের অংশগ্রহণ ছাড়া দল ১৯৯৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত টেস্ট ম্যাচ খেলেছে ৬৯টি। এর মধ্যে হেরেছে ২৮টি টেস্ট ম্যাচে এবং জয় পেয়েছে ২০টি টেস্ট ম্যাচে।
সুতরাং পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে সোয়েব দলে কত প্রয়োজনীয় পেসার।
১৪ বছরের ক্যারিয়ারে সোয়েব অধিকাংশ সময়ই ইনজুরিতে আক্রান্ত ছিলেন। তাছাড়া বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অভিযোগে তিনি অভিযুক্ত হন। ফলে থাকতে হয়েছে দলের বাইরে। বিশ্বকাপের পর থেকে তাকে হয়তো আর কোনো অভিযোগ তাড়িয়ে বেড়াবে না। ক্রিকেট বিশ্বে শেষ হবে সোয়েব নামের এক ঝলসানো গতির অধ্যায়ের।
No comments:
Post a Comment