আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ বলেছেন, বাংলাদেশের সংবিধানে সামরিক শাসন বলে কিছু নেই। সংসদের ৩০০ জন সাংসদও যদি একমত হয়ে বলেন যে সামরিক শাসন বৈধ, তার পরও সেটা অবৈধ থেকে যাবে। আর অবৈধ শাসনব্যবস্থা বাতিলের এখতিয়ার সব সময়ই আদালতের আছে। কারণ, সর্বোচ্চ আদালতই সংবিধানের রক্ষক।
গতকাল শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে বেসরকারি সংগঠন সেন্টার ফর প্র্যাকটিক্যাল মাল্টিমিডিয়া স্টাডিজ (সিপিএমএস) আয়োজিত ‘মত প্রকাশের স্বাধীনতা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় আইনমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এর আগে বিএনপির নেতা নাজমুল হুদা আইনমন্ত্রীর কাছে জানতে চান, সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী বাতিলের এখতিয়ার আদালতের আছে কিনা।
আইনমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যার পর যাঁরা ক্ষমতায় ছিলেন, তাঁরা সামরিক ফরমান দিয়ে অসাংবিধানিক পন্থায় সংবিধান পরিবর্তন করেছেন। পঁচাত্তরের ঘটনার নেপথ্যনায়ক জিয়াউর রহমান ১৯৭৯ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর পঞ্চম সংশোধনী পাস করেন। এতে বলা হয়, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট থেকে ১৯৭৯ সালের ৯ এপ্রিল পর্যন্ত যেসব সামরিক ফরমান জারি করা হয়েছিল, সেগুলো বৈধ। সামরিক শাসনকে বৈধতা দেওয়ার ক্ষমতা সংসদকে কে দিল—এ বিষয়ে আইনমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, সামরিক শাসনের মাধ্যমে সংবিধানের মৌলিক স্তম্ভবিরোধী কাজ করে সংসদে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠের ভিত্তিতে তা পাস করিয়ে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু সংসদ কখনো সামরিক শাসনকে বৈধতা দিতে পারে না। তাই সংবিধানে অসাংবিধানিক যা কিছুই যোগ করা হোক না কেন, সেগুলো সব সময়ই অবৈধ থাকবে।
এর আগে বিএনপির সহসভাপতি সাবেক মন্ত্রী নাজমুল হুদা বলেন, সব ক্ষমতার উৎস জনগণ। কাজেই গণভোট বা নির্বাচিত প্রতিনিধি ছাড়া কারও সংবিধান পরিবর্তনের ক্ষমতা নেই।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ফাহমিদুল হক অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। মূল প্রবন্ধ পড়ে শোনান নরওয়ের অসলো বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ক্রিস্টিয়ান স্ক্যার ওরগারেট। আলোচনায় অংশ নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য হারুন-অর-রশিদ, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি আনোয়ার হোসেন, এশিয়াটিক সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক মাহফুজা খানম প্রমুখ।
No comments:
Post a Comment