আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) দাবি, খালেদা জিয়াকে ঢাকা সেনানিবাসের বাড়ি থেকে সরানোর সময় অসদাচরণ করার অভিযোগ মিথ্যাচার, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তিনি যথাযথ সম্মান ও মর্যাদা নিয়েই সেনানিবাসের বাড়ি ছেড়েছেন।
আজ রোববার সেনানিবাসের জাহাঙ্গীর গেটের কাছে ক্যাপ্টেনস ওয়ার্ল্ডে এক সংবাদ সম্মেলনে আইএসপিআরের পরিচালক শাহীনুল ইসলাম লিখিত বক্তব্যে এ কথা বলেন।
আইএসপিআরের পক্ষে জানানো হয়, খালেদা জিয়াকে টেনে-হিঁচড়ে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া, দরজার তালা ভাঙা, এক কাপড়ে চলে যেতে বাধ্য করা, নিকটাত্মীয়ের সঙ্গে অসদাচরণ করার যেসব অভিযোগ তিনি তুলেছেন, তা মিথ্যাচার। বরং তিনি স্বশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশ করে গালিগালাজ, হুমকি প্রদান, ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড, সামরিক ভূমি প্রশাসন পরিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং র্যাব ও পুলিশ সদস্যদের সরকারি কাজে বাধা দিয়ে তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন।
কিন্তু দুর্ব্যবহারের পরও সংশ্লিষ্ট সবাই সংযম দেখিয়ে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করেছেন। ফলে খালেদা জিয়া যথাযথ সম্মান ও মর্যাদা নিয়েই সেনানিবাসের বাড়ি ছেড়েছেন। বর্তমানে বাড়িটি পুলিশের হেফাজতে আছে।
আইএসপিআরের লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, খালেদা জিয়ার শহীদ মঈনুল সড়কের বাড়িটি ছেড়ে দেওয়ার শেষ সময় ছিল গত ১২ নভেম্বর। সময়সীমা শেষ হওয়ার পর গতকাল সকালে সেনানিবাস কর্তৃপক্ষ বাসাটি বুঝে নেওয়ার জন্য সেখানে যান। সকাল সাড়ে নয়টার দিকে ওই বাসার ৬১ জন কর্মচারী বাসা ছেড়ে যান।
ঘুম থেকে ওঠার পর সকাল ১০টার দিকে খালেদা জিয়া জানতে পারেন, তাঁকে বাসা ছেড়ে দিতে অনুরোধ জানানোর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এসেছে। দুই ঘণ্টায়ও তিনি কোনো সাড়া না দেওয়ায় দুজন মহিলা পুলিশ সদস্য তাঁর রুমের জানালায় টোকা দিলে তিনি খেপে যান এবং উত্তেজিত কণ্ঠে সেনাবাহিনীকে উদ্দেশ করে গালিগালাজ করেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘আমি সবার চেহারা চিনে রাখছি। সকলকে এর চরম মূল্য দিতে হবে। সবাইকে চাকরি থেকে বের করে দেওয়া হবে।’
আইএসপিআরের পক্ষে আরও বলা হয়, গতকাল পর্যন্ত বিভিন্ন তারিখে শতাধিক কার্টন ও ব্যাগ খালেদা জিয়া তাঁর ভাই সাঈদ এস্কান্দার এবং ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর শাশুড়ির বাড়িতে স্থানান্তর করেন। বাসায় থাকা অন্যান্য মালামাল প্যাকিং করে স্থানান্তরের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়। এটি তাঁর বাড়ি ছাড়ার পরিকল্পিত প্রস্তুতির সুস্পষ্ট স্বাক্ষর বহন করে। তিনি জোরপূর্বক নয়, বরং স্বেচ্ছায় আদালতের রায় মেনে নিয়ে বাড়ি ছেড়েছেন। যদি জোর করে তাঁকে বাড়ি ছাড়তে বাধ্য করা হতো, তবে সকাল আটটার মধ্যেই তিনি বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হতেন।
news:prothom alo
No comments:
Post a Comment