
নিউইয়র্ক থেকে এনাঃ বিশ্বের সেরা ধনী এবং সফটওয়্যারের কিংবদন্তী পুরুষ মাইক্রোসফটের বিল গেটসের ১১ বছর বয়েসী পুত্র রোরি অংক শিখছে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত আমেরিকান সালমান খানের কাছে। তবে সালমান খানকে সশরীরে উপস্থিত হয়ে প্রচলিত রীতি অনুযায়ী ধনীর দুলাল রোরিকে টিচিং দিতে হচ্ছে না।
ইন্টারনেটে ইউটিউবে ভিডিওর মাধ্যমে এ শিক্ষা দেয়া হচ্ছে। স্কুল রুম টিচিং পদ্ধতিকেও সালমান খানের এ ব্যবস্থা প্রচন্ড ঝাঁকি দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রীর নির্ভরযোগ্য অবলম্বনে পরিণত হয়েছে সালমান খানের এ পদ্ধতি-যার নাম দিয়েছেন খান একাডেমি।
উল্লেখ্য যে, ইতিমধ্যেই সালমান খানকে মোটা অংকের গুগল এওয়ার্ড, সিএনএন এওয়ার্ড এবং মাইক্রোসফট এডুকেশন এওয়ার্ড প্রদান করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র এবং আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাতিসম্পন্ন চ্যানেলগুলোতে ঘনঘন ডাক পড়ছে সালমান খানে। সালমান খানের জন্ম লুঝিয়ানা স্টেটে এবং তার বাবার বাড়ি বরিশাল এবং মার জন্ম কলকাতায়। বিল গেটস তার ছেলের কাছে খান একাডেমির তথ্য জেনে ইউটিউবে তা প্রত্যক্ষ করেন। অভিভূত হয়েছেন বিল গেটস এবং তা নিজের মধ্যে লুকিয়ে রাখতে পারেননি।
বাঙালির অসাধারণ মেধাশক্তির অত্যন্ত আবেগের সাথে তা বিবৃত করেছেন এ্যাসপেন আইডিয়াস ফেস্টিভেলে। ৩৩ বছর বয়েসী সালমান খানের অসাধারণ মেধার কথা বিবৃতকালে বিল গেটসের মুখে বাংলাদেশও উচ্চারিত হয়। আর যায় কোথায়, সালমান খান এখন নতুন প্রজন্মের মুখে মুখে। ইংরেজীতে অংশ শেখানোর এ পদ্ধতিকে বেশ কয়েকটি ভাষায় অনুবাদ করায় প্রতিদিনই ওয়েবসাইটে তার ছাত্রের সংখ্যা বাড়ছে। বিনা মূল্যের এ শিক্ষা লুফে নিচ্ছে সকলে। দ্বাদশ গ্রেড পর্যন্ত সকল ক্লাসের অংশ সহজে শেখা যাচ্ছে খান একাডেমি ভ্রমণ করে। পোলো টি শার্ট এবং খাকি প্যান্ট পরিহিত সাদাসিদে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত সালমান খান নিজের নাম খোদাই ফেললেন ইয়াহু, গুগল আর ফেসবুকের তরুণ উদ্ধাবকদের পাশে।
ক্যালিফোর্নিয়ার সিলিকনভ্যালীর একটি র্যাঞ্চ হাউজ থেকে মাত্র কয়েক শ ডলারের ভিডিও ইক্যুইপমেন্ট দিয়ে সালমান খান শিক্ষার্জনের জগত কাপিয়ে দিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিল গেটস। সালমান খান এ প্রসঙ্গে বলেন, আমি ক্লাসরুম শিক্ষক হলেও এ পদ্ধতিতেই শিক্ষা দিতাম। আমি একেবারে সমকালিন চিন্তাধারা থেকে, এ সময়ের শিক্ষার্থীরা যেমনভাবে চায় তেমনভাবেই করেছি। ব্যুরোক্রেটিক সিস্টেমে যে টেক্সটবুক লেখা হয়, আমি তা পছন্দ করি না। সে কারণে আমি তার বিপরীত পথ অবলম্বন করেছি।
সরকারি বা কপোরেট মুনাফালোভী মানসিকতা কখনোই বিশ্বের কোটি কোটি তরুণ-তরুণীকে প্রকৃতভাবে শিক্ষা দিতে পারবে না। তিনি বলেন, আমি অংক, কম্প্যুটার সায়েন্স এবং ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজমেন্টের ছাত্র। তাহলে বুঝতে পারেন ডাটা এবং এনালাইসিসে আমার চেয়ে দক্ষ আর কেউ হতে পারবে কিনা।
সালমান খান বলেছেন যে, তিনি কখনোই খান একাডেমিকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে চান না। তিনি বলেন, আমার বয়স যখন ৮০ হবে আমি তখন ভেবে শান্তি পাবো যে বিশ্বজুড়ে বিলিয়ন বিলিয়ন শিক্ষার্থীকে বিশ্বমানের শিক্ষা অর্জন করার অধিকার সৃষ্টি করে দিয়েছি।
এছাড়া ভিডিওগুলো রয়ে যাচ্ছে-যা দিয়ে আমাদের সন্তানেরা বংশ পরম্পরায় অংশ শিখতে পারবে। ইতিমধ্যেই ১১ শতাধিক আইটেমের ভিডিও তৈরী করেছি। ইন্টারনেটের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা এর বিভিন্ন সাইট থেকে তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী শিক্ষা গ্রহণ করছে। প্রতিটি ভিডিওর দৈর্ঘ হচ্ছে সর্বোচ্চ ২০ মিনিট। তিনি বলেন, আমার চাহিদা তেমন নেই। একজন বিউটিফুল স্ত্রী রয়েছেন, হিলারিয়াস পুত্র রয়েছে, দুটি হুন্ডা গাড়ি আছে এবং চমৎকার একটি বাড়ি আছে। একজন মানুষের আর কি চাওয়া থাকতে পারে। সালমান খানের এ উদ্ভাবনী ক্ষমতা বাংলাদেশী-আমেরিকান নতুন প্রজন্মকেও আনন্দিত করেছে।
No comments:
Post a Comment