CRICKET LIVE STREAMING

Saturday, July 23, 2011

 এসেছে গুগল+

 তারিখ: ২২-০৭-২০১১

নেটিজেনদের মধ্যে এখন একটাই আলোচনা, ফেসবুকের একক আধিপত্যে ভাগ বসাতে যাচ্ছে গুগল + (প্লাস)। গুগলের সামাজিক যোগাযোগের নতুন এ সেবা কী সুবিধা দিচ্ছে? অনেকে তো রীতিমতো ব্যবহার করাই শুরু করে দিয়েছেন, বিশেষ করে অনেক অফিসেই ফেসবুকের ব্যবহার বন্ধ। সেসব অফিসের কর্মীরা যেন বিকল্প খুঁজে পেলেন গুগল প্লাসে।
৭ জুলাই থেকে গুগল প্লাস সবার জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে এখনো এটা পরীক্ষামূলক পর্যায়ে আছে। ফেসবুকের নতুন প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবেই আবির্ভূত হতে চাচ্ছে গুগল ইনকরপোরেটেডের গুগল +। গুগলের আরও দুটি সামাজিক সাইট অরকুট এবং গুগল বাজ হালে তেমন পানি না পেলেও গুগল প্লাস সামাজিক নেটওয়ার্ক হিসেবেই এসেছে। গুগল প্লাসের সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে এটা জিমেইল থেকে সরাসরি ব্যবহার করা যায়, ফলে নতুন করে নাম, পাসওয়ার্ড দিয়ে এটায় ঢুকতে (লগ-ইন) হয় না।
ফেসবুকের সঙ্গে জনপ্রিয়তায় গুগল প্লাস পারবে কি না, তা সময়ই বলে দেবে। তবে এরই মধ্যে গুগল প্লাসের সদস্য সংখ্যা সারা বিশ্বে ২ কোটির মতো। বাংলাদেশেও অনেকে এটি ব্যবহার করছেন। জেন্ড সনদপ্রাপ্ত তথ্যপ্রযুক্তিবিদ হাসিন হায়দার বলেন, ‘গুগল প্লাসের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হলো ছবি শেয়ারিং। ছবির মান এবং স্টাইল অনেক দিক দিয়েই ফেসবুকের চেয়ে ব্যতিক্রম। এ ছাড়া তেমন কোনো পার্থক্য চোখে পড়েনি।
টেকনো ভিলা সলিউশনের পরিচালক মো. রাকিবুল ইসলাম জানান, গুগল প্লাসের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক আমার দৃষ্টিতে ‘সার্কেল’, যার মাধ্যমে বিভিন্ন স্তরের বন্ধুদের খুব সহজেই আলাদা করা যায়।’ হলিক্রস কলেজের উচ্চমাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী নিশাত সালসাবিল জানায়, নতুন যেকোনো কিছুই সবার কাছে আকর্ষণীয় মনে হয়। এ ছাড়া গুগল প্লাস আসায় একটা নতুন প্রতিযোগিতা তৈরি হবে। যেটা হয়তো ফেসবুককে আরও এগিয়ে নেবে।
কলেজশিক্ষক কে এম হুসনুজ্জাহিদ বলেন, ফেসবুকের স্ট্যাটাসগুলো শেয়ার করা হলে বন্ধু, ছাত্র সবাই দেখতে পারে। কিন্তু গুগল প্লাসের সার্কেল এ সমস্যার সমাধান দিতে পারে। বিডিঅলইনফোর তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ সাদ্দাম হোসেন বলেন, গুগল প্লাস অনেক ভারী, খুলতে সময় নেয় অনেক বেশি। বাংলাদেশে জনপ্রিয় হতে হলে একে আরও হালকা করতে হবে।
https://plus.google.com হচ্ছে গুগল প্লাসের ঠিকানা। অনেকটাই ফেসবুকের আদলে তৈরি এ গুগল প্লাস। এখানে ফেসবুকের মতো নিজেদের মধ্যে নানা রকম চক্র (সার্কেল) তৈরি করা যাবে। ছবি ও ভিডিও রাখা যাবে। এতে রয়েছে ফটো ট্যাব, ভিডিও ট্যাব, +১ ট্যাব, বাজ ট্যাব। যাঁদের গুগল প্লাস অ্যাকাউন্ট নেই, তাঁরাও অন্যের গুগল প্লাস প্রোফাইল দেখতে পারবেন, যেটা ফেসবুকে সম্ভব নয়। আর এ সবই গুগল সার্চে দেখাবে কি না, তাও নির্ধারণ করা যাবে প্রোফাইলে।

কেমন এই গুগল+
গুগল প্লাস এখন মজিলা ফায়ারফক্স, ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার, গুগল ক্রোম এবং সাফারি দিয়ে খোলা যায়। এতে বন্ধুদের আমন্ত্রণ জানানো যায়। বন্ধুদের আমন্ত্রণ জানাতে গুগল প্লাসের ডানের প্যানেলে (সদ্য যুক্ত হওয়া) Send invite -এর Invite people to join Google+-এ ক্লিক করতে হয়। যে উইন্ডো আসবে সেখানে +Add people to invite অংশে যাঁকে আমন্ত্রণ জানাতে চান, তাঁর ই-মেইল ঠিকানা লিখে Invite বাটনে ক্লিক করলে তাহলেই আপনার বন্ধুর ই-মেইলে গুগল+ ইনভাইটেশন চলে যাবে।
গুগল প্রোফাইল: এখন থেকে গুগল প্রোফাইল বলে আলাদা কোনো পেজ আর থাকছে না। গুগল প্রোফাইল গুগল প্লাসের প্রোফাইল হিসেবে ব্যবহূত হবে এবং গুগল প্রোফাইল লিংকে (যেমন, https://profiles.google.com/kmarsus) ঢুকলে তা চলে যাবে (ফরওয়ার্ড) গুগল প্লাসের প্রোফাইলে।
লেখা দেখানো: কোনো লেখা বা পোস্ট অন্যদের দেখাতে চান কি না, তা বলে দেওয়া যাবে এতে। এটা সবার জন্য (পাবলিক) নয়, নির্দিষ্ট সার্কেলের জন্য তা-ও ঠিক করে দেওয়া যাবে। এ জন্য Share বাটনের ওপর Add more people-এ ক্লিক করতে হবে।
গুগল +১: বেশ কিছুদিন আগে গুগল +১ বাটন এনেছে গুগল। এটা অনেকটা ফেসবুক লাইক বাটনের মতো। গুগল প্রোফাইলে +১ বাটন থাকলে তাতে Show this tab on my profile-এ ক্লিক করে +১ বাটন সক্রিয় করুন। আর যদি +১ বাটন না থাকে, তাহলে গুগলে সার্চ করুন এবং দেখুন ফলাফলের ডানে +১ বাটনে রয়েছে। এই ১ বাটনে ক্লিক করুন এবং নতুন উইন্ডো থেকে Confirm and +1 বাটনে ক্লিক করুন।
সার্কেল তৈরি এবং বন্ধুদের যুক্ত করা: সার্কেলকে বিভাগ বা ফেসবুকের তালিকার মতো বলা যায়। সার্কেল তৈরি করতে Circles-এ ক্লিক করে দেখা যাবে নিচে কতগুলো সার্কেল রয়েছে। এখানে বাঁয়ে Drop here to create a new circle-এ ক্লিক করে সার্কেল তৈরি করা যাবে। এখন বন্ধুদের সার্কেলের ওপর টেনে আনলেই হবে। এ ছাড়া কোনো বন্ধু বা প্রোফাইল সার্কেলে যুক্ত করা না থাকলে Add to circles-এ ক্লিক করে পছন্দের সার্কেলে যুক্ত করা যাবে।
জিমেইল থেকে: জিমেইল থেকে গুগল প্লাসে পোস্ট করতে চাইলে জিমেইলের ওপর ডানে Share-এ ক্লিক করে লিখে Share বাটনে ক্লিক করলেই হবে।
জিমেইল নোটিফিকেশন: গুগল প্লাসে কোনো হালনাগাদ (আপডেট) এলে তা জিমেইলের ওপর ডানে Notifications-এ সংখ্যা দেখা যাবে। এখানে ক্লিক করে নোটিফিকেশনগুলো পাওয়া যাবে এবং নোটিফিকেশনটিতে ক্লিক করলে গুগল প্লাস পেজ খুলবে। এ ছাড়া ওপরে বাঁ পাশে গুগল প্লাসের একটি ট্যাবও থাকবে। এখানে ক্লিক করে গুগল প্লাসে যাওয়া যাবে।
জিমেইলে গুগল প্লাসের মেইল: গুগল প্লাসে কোনো হালনাগাদ এলে বা মন্তব্য করলে তা জিমেইলে ই-মেইল হিসেবে আসবে, যেমনটা গুগল বাজের ক্ষেত্রে আসে। তবে চাইলে গুগল প্লাসের সেটিংস থেকে এই মেইল আসা বন্ধ করা যাবে।
গুগল পিকাসা: গুগল পিকাসাতে থাকা ‘পাবলিক’ ছবির অ্যালবামগুলো গুগল প্লাসের ফটো ট্যাবে দেখা যাবে। আর গুগল প্লাস থেকে কোনো ছবি যুক্ত করলে তা গুগল পিকাসার স্ক্র্যাপবুক ফটোস অ্যালবামে যুক্ত হবে।
গুগল প্লাস থেকে মেইল করা: গুগল প্লাস থেকে কোনো বন্ধুকে সরাসরি মেইল করা যাবে, যা তার জিমেইলে পৌঁছে যাবে। এ জন্য বন্ধুর প্রোফাইলে বাঁ পাশে থাকা ছবির নিচে Send an Mail বাটনে ক্লিক করে মেইলের বিষয় এবং মেইল লিখে Send Mail বাটনে ক্লিক করলেই হবে। কোনো বন্ধুকে মেইল পাঠালে তা জিমেইলের ইনবক্সে এবং সেন্টে চলে আসবে।
মুঠোফোনে গুগল প্লাস: মুঠোফোনে গুগল প্লাস ব্যবহার করা যাবে m.google.com/plus ঠিকানার সাইট থেকে।
চ্যাট করা: গুগল প্লাসের বন্ধুদের সঙ্গে অনলাইন চ্যাট করা যাবে বাঁ পাশের Chat-এ ক্লিক করে।
হ্যাংআউটস: হ্যাংআউটস হচ্ছে বন্ধুদের সঙ্গে ভিডিও এবং ভয়েস চ্যাট করার ব্যবস্থা। ডানের প্যানেলে Start a Hangout-এ ক্লিক করলে নতুন একটি উইন্ডোতে হ্যাংআউটস চালু হবে। এ জন্য অবশ্য গুগল ভয়েস প্লাগইন ইনস্টল থাকতে হবে।
স্পার্কস: স্পার্কস হচ্ছে কোনো ওয়েবসাইটে ফিড থেকে তথ্য দেখার ব্যবস্থা। বাঁ পাশের Sparks-এ ক্লিক করলে কিছু ডিফল্ট স্পার্কস আসবে, এখানে কোনোটির ওপর ক্লিক করলে বা সার্চ বক্সে কোনো বিষয় বা ওয়েবসাইটের ঠিকানা লিখে সার্চ করলে ফলাফল আসবে। স্পার্কটিকে সেভ করে রাখতে চাইলে অফ interest বাটনে ক্লিক করলে বাঁ পাশের প্যানেলে তা যুক্ত হবে।
সাজেশন: ফেসবুকের মতো Suggestions দেখা যাবে ডানের প্যানেলে।
গুগল প্লাস সেটিংস: গুগল প্লাস সেটিংস থেকে দরকারি কিছু পরিবর্তন করা যাবে, এ জন্য ওপরের ডানে Options বাটনে ক্লিক করে Google+ Settings-এ ক্লিক করে বিভিন্ন সেটিং পরিবর্তন করা যাবে। যেমন, মেইল হিসেবে আসা নোটিফিকেশন বন্ধ করা, প্রাইভেসি পরিবর্তন করা, ভাষা সেট করা, ডাটা ডাউনলোড করা, অন্য অ্যাকাউন্ট যুক্ত করা এবং গুগল প্লাস অ্যাকাউন্ট ডিলিট করা ইত্যাদি।
ফেসবুক বনাম গুগল+
ফেসবুক এবং গুগল প্লাসের মধ্যে মিল অনেক। তবে কিছু বাড়তি সুবিধা রয়েছে দুই সাইটেই।
গুগল+ এবং ফেসবুকের সাদৃশ্য
গুগল+ এ রয়েছে Stream, যা ফেসবুকে Status. যাতে লেখার পাশাপাশি ছবি, ভিডিও, ওয়েব ঠিকানা ভাগাভাগি করা যায়।
ছবিতে ট্যাগ এবং মন্তব্য করা যায় দুটিতেই।
নোটিফিকেশন ব্যবস্থা।
চ্যাট করার ব্যবস্থা।
দুটি সাইটেই বন্ধু খোঁজার ব্যবস্থা রয়েছে
ফেসবুকে লাইক আর গুগল প্লাসে +১
গুগল প্লাসে সার্কেল আর ফেসবুকে লিস্ট
গুগল প্লাসের বাড়তি সুবিধা
গুগল+ এ লোকেশন শেয়ার করা যায়।
গ্রুপ ভিডিও চ্যাটিং (হ্যাংআউটস) করা যায়।
গোপনীয়তার বিষয়টি যেভাবে গুগল প্লাসে দেখা হয়েছে, ততটা হয়নি ফেসবুকে।
গুগল প্লাস এখনো ফেসবুকের মতো অসংখ্য প্রোগ্রাম থেকে মুক্ত।
গুগল প্লাসে যা নেই
ফেসবুকে গ্রুপ, নোট, প্রচুর প্রোগ্রাম রয়েছে, যা গুগল+ এ নেই।

No comments:

Post a Comment

kazi-music