
বেঙ্গালুরুতে ভাইয়ের বাড়িতে গিয়েছিলাম দুই বছর আগে। রাজস্থানী এক প্রতিবেশী আমাকে দেখে এগিয়ে এলেন, ‘আপনি রজনীকান্ত না? অবসরের পর এখন কী করছেন?’ মুহূর্তেই ঘাবড়ে গেলাম, ‘অবসর? কার অবসর? কিসের অবসর?’ প্রতিবেশী নাছোড়বান্দা, ‘কেন আপনি কি এখনো অভিনয় করছেন?’ জনৈক ব্যক্তিকে জানালাম, বর্তমানে ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চনের সঙ্গে রোবট নামে একটি ছবিতে অভিনয় করছি। ঐশ্বরিয়ার নাম শুনে ভদ্রলোক বেজায় পুলকিত। পাঁচ মিনিট ঐশ্বরিয়ার স্তুতিতে ব্যস্ত থাকলেন। পরক্ষণেই জিজ্ঞাসা, ‘ছবির নায়ক কে?’ একটু বিরক্ত নিয়েই জানালাম, ‘কেন আমি!’ বিশ্বাস করুন, নায়ক হিসেবে আমার নাম শুনে ভদ্রলোক এমনই মর্মাহত হলেন, ১০ মিনিট কথাই বলতে পারলেন না। অনেক কষ্টে নিজেকে সামলে বিদায় নিলেন। আর নিজের সঙ্গেই বকবক করতে লাগলেন, ‘ঐশ্বরিয়া কি পাগল হয়ে গেল? শেষ পর্যন্ত এই বুড়োর সঙ্গে?’ মালয়েশিয়ায় রোবট ছবির অডিও মুক্তি অনুষ্ঠানে রজনীকান্ত নিজেই বয়ান করছিলেন এই মজার স্মৃতি। ৬০ বছর বয়স তাঁর। অথচ প্রাণশক্তি এতটুকু কমেনি। ভারতে এখন পর্যন্ত সর্বাধিক পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত অভিনেতা রজনীকান্ত। এই রোবট ছবির জন্যই প্রযোজক তাঁর পকেটে ভরে দিয়েছেন ৫০ কোটি রুপি! না দেওয়ার কোনো কারণ নেই। প্রযোজকের আগের ছবিগুলো যে শুধু রজনীকান্ত নামের ওপর ভর করে ১০০ থেকে ১৫০ কোটি রুপি ব্যবসা করেছিল। সর্বশেষ শিবাজি-দ্য বস আয় করেছিল ১৭৫ কোটি রুপি। রোবট ছবির বাজেটও ১৭৫ কোটি রুপি! পরিচালক শঙ্কর বলেন, ‘শুরুতে ভেবেছিলাম রোবট ভারতের সর্বকালের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ছবি হবে। শুটিং শেষে খেয়াল করলাম, এটি এশিয়ার সর্বকালের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ছবি হতে যাচ্ছে। এর আগে এশিয়ার কোনো ছবিতেই ১৭৫ কোটি রুপি ব্যয় হয়নি। ছবিতে প্রতিটি রোবট তৈরির জন্য পাঁচ কোটি রুপি খরচ হয়েছে। ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন নিয়েছেন ছয় কোটি রুপি, যা ভারতের অভিনেত্রীদের জন্য রেকর্ড। মূলত এটি তামিল ছবি। এন্ধিরান নাম নিয়ে তামিল ভাষায় নির্মিত হয়েছে। রজনীকান্ত ও ঐশ্বরিয়ার ভক্তদের কথা বিবেচনা করে হিন্দি এবং তেলেগু ভাষায় ডাবিং করা হয়েছে। শুরুতে অবশ্য কমল হাসান ও পরে শাহরুখ খানের ছবিটি করার কথা ছিল। কিন্তু নানা কারণে রজনীকান্ত শঙ্করের প্রস্তাবে সাড়া দেন।
অ্যানিমেশন-নির্ভর সাই-ফাই ছবি রোবট নিয়ে যদিও হিন্দি ছবির দর্শকদের মধ্যে কোনো মাতামাতি নেই। তবে দক্ষিণে এবং ভারতের বাইরে রোবটজ্বরে ভুগছে সিনেমামোদী দর্শকেরা। এ কারণেই রজনীকান্তের নতুন ছবিটির রেকর্ড দুই হাজার ২৫০টি প্রিন্ট মুক্তি পাবে। তামিলনাড়ুর বেশির ভাগ প্রেক্ষাগৃহে আগামী দুই সপ্তাহের টিকিট শেষ। দর্শকদের আগ্রহের কথা বিবেচনা করে চেন্নাইয়ের একটি মাল্টিপ্লেক্সে দিনে রেকর্ড ৬০টি শো দেখাবে। জ্যাকসন হাইটসের একটি প্রেক্ষাগৃহে ১০ মিনিটের মধ্যে অগ্রীম টিকিট শেষ হয়ে যায়। আমেরিকার মতো দেশে ভারতের কোনো ছবির জন্য এই উন্মাদনা, এটিও একটি রেকর্ড। ঐশ্বরিয়া এ ছবিতে রেকর্ড ৫৭টি পোশাক পরেছেন।
এত রেকর্ডের সমাগম এই এক ছবিতে! কিন্তু কেন? ছবির বিশেষত্বটা কী? জানালেন স্বয়ং বিগ বি অমিতাভ বচ্চন, ‘অভিনয়ের এত বছর পরে এসেও রজনীকান্তের হাঁটা-চলা, কথা বলা, সম্পূর্ণ ব্যক্তিত্বই সাধারণ মানুষের মতো। আমজনতা রজনীকান্তের মধ্যে নিজের জীবনের প্রতিচ্ছবি দেখতে পায়। একজন শিল্পী তখনই সত্যিকারের তারকা হতে পারেন, যখন খ্যাতি, নামধাম, টাকা-পয়সা সব মিলিয়ে স্টারডমকে যথাযথভাবে সামাল দিতে পারেন। রজনী পেরেছেন। আমি নিজে ব্যক্তিগতভাবে রজনীকান্তকে অনুসরণ করার চেষ্টা করি।’ হয়তো এ কারণেই অমিতাভ বচ্চন বিনা পারিশ্রমিকে এ ছবির সূত্রধরের কাজটি করে দিয়েছেন। কৃতজ্ঞ রজনীকান্ত বলেন, ‘অমিতাভ বচ্চন আমার অনুপ্রেরণা, আমার গুরু। যখনই কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগি, আমি অমিতজিকে ফোন করি।’
অস্কার বিজয়ী জুটি সংগীত পরিচালক এ আর রহমান, শব্দগ্রাহক রেসুল রোবট ছবিতে কাজ করেছেন। ছবির কাহিনি অনেকটা এ রকম—বিজ্ঞানী মানবকল্যাণের জন্য অনেক সাধনা করে নির্মাণ করেন একটি রোবট। মানুষের মতোই সবকিছু করতে সক্ষম এই যন্ত্রমানব। সমস্যা একটাই, মানবিক আবেগ, প্রেম-ভালোবাসা বোঝার ক্ষমতা নেই তার। একপর্যায়ে বিজ্ঞানী হালনাগাদ করেন রোবটটিকে। নতুন করে আবেগ সঞ্চার করে দেন তার ভেতর। ব্যস, বড় দুর্ঘটনাই (!) ঘটিয়ে ফেলে রোবট। সুন্দরী মেডিকেল ছাত্রী ঐশ্বরিয়ার প্রেমে পড়ে বসে রোবট। কিন্তু সমাজ রোবট-মানবীর এই প্রেম মেনে নিতে পারে না। বিজ্ঞানী সিদ্ধান্ত নেন রোবটকে ধ্বংস করার, কিন্তু প্রেমের জন্য স্রষ্টার সঙ্গে লড়তেও দ্বিধা করে না রোবট। বিজ্ঞানী ও রোবট দ্বৈত চরিত্রে অভিনয় করেছেন রজনীকান্ত। আগামীকাল রোবট মুক্তি পাওয়ার পর বোঝা যাবে, এশিয়ার সবচেয়ে ব্যয়বহুল ছবিটি ব্যবসার দিক দিয়ে রেকর্ড লাভ করতে পারে কি না!
রুম্মান রশীদ খান
তথ্যসূত্র: ওয়েবসাইট
অ্যানিমেশন-নির্ভর সাই-ফাই ছবি রোবট নিয়ে যদিও হিন্দি ছবির দর্শকদের মধ্যে কোনো মাতামাতি নেই। তবে দক্ষিণে এবং ভারতের বাইরে রোবটজ্বরে ভুগছে সিনেমামোদী দর্শকেরা। এ কারণেই রজনীকান্তের নতুন ছবিটির রেকর্ড দুই হাজার ২৫০টি প্রিন্ট মুক্তি পাবে। তামিলনাড়ুর বেশির ভাগ প্রেক্ষাগৃহে আগামী দুই সপ্তাহের টিকিট শেষ। দর্শকদের আগ্রহের কথা বিবেচনা করে চেন্নাইয়ের একটি মাল্টিপ্লেক্সে দিনে রেকর্ড ৬০টি শো দেখাবে। জ্যাকসন হাইটসের একটি প্রেক্ষাগৃহে ১০ মিনিটের মধ্যে অগ্রীম টিকিট শেষ হয়ে যায়। আমেরিকার মতো দেশে ভারতের কোনো ছবির জন্য এই উন্মাদনা, এটিও একটি রেকর্ড। ঐশ্বরিয়া এ ছবিতে রেকর্ড ৫৭টি পোশাক পরেছেন।
এত রেকর্ডের সমাগম এই এক ছবিতে! কিন্তু কেন? ছবির বিশেষত্বটা কী? জানালেন স্বয়ং বিগ বি অমিতাভ বচ্চন, ‘অভিনয়ের এত বছর পরে এসেও রজনীকান্তের হাঁটা-চলা, কথা বলা, সম্পূর্ণ ব্যক্তিত্বই সাধারণ মানুষের মতো। আমজনতা রজনীকান্তের মধ্যে নিজের জীবনের প্রতিচ্ছবি দেখতে পায়। একজন শিল্পী তখনই সত্যিকারের তারকা হতে পারেন, যখন খ্যাতি, নামধাম, টাকা-পয়সা সব মিলিয়ে স্টারডমকে যথাযথভাবে সামাল দিতে পারেন। রজনী পেরেছেন। আমি নিজে ব্যক্তিগতভাবে রজনীকান্তকে অনুসরণ করার চেষ্টা করি।’ হয়তো এ কারণেই অমিতাভ বচ্চন বিনা পারিশ্রমিকে এ ছবির সূত্রধরের কাজটি করে দিয়েছেন। কৃতজ্ঞ রজনীকান্ত বলেন, ‘অমিতাভ বচ্চন আমার অনুপ্রেরণা, আমার গুরু। যখনই কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগি, আমি অমিতজিকে ফোন করি।’
অস্কার বিজয়ী জুটি সংগীত পরিচালক এ আর রহমান, শব্দগ্রাহক রেসুল রোবট ছবিতে কাজ করেছেন। ছবির কাহিনি অনেকটা এ রকম—বিজ্ঞানী মানবকল্যাণের জন্য অনেক সাধনা করে নির্মাণ করেন একটি রোবট। মানুষের মতোই সবকিছু করতে সক্ষম এই যন্ত্রমানব। সমস্যা একটাই, মানবিক আবেগ, প্রেম-ভালোবাসা বোঝার ক্ষমতা নেই তার। একপর্যায়ে বিজ্ঞানী হালনাগাদ করেন রোবটটিকে। নতুন করে আবেগ সঞ্চার করে দেন তার ভেতর। ব্যস, বড় দুর্ঘটনাই (!) ঘটিয়ে ফেলে রোবট। সুন্দরী মেডিকেল ছাত্রী ঐশ্বরিয়ার প্রেমে পড়ে বসে রোবট। কিন্তু সমাজ রোবট-মানবীর এই প্রেম মেনে নিতে পারে না। বিজ্ঞানী সিদ্ধান্ত নেন রোবটকে ধ্বংস করার, কিন্তু প্রেমের জন্য স্রষ্টার সঙ্গে লড়তেও দ্বিধা করে না রোবট। বিজ্ঞানী ও রোবট দ্বৈত চরিত্রে অভিনয় করেছেন রজনীকান্ত। আগামীকাল রোবট মুক্তি পাওয়ার পর বোঝা যাবে, এশিয়ার সবচেয়ে ব্যয়বহুল ছবিটি ব্যবসার দিক দিয়ে রেকর্ড লাভ করতে পারে কি না!
রুম্মান রশীদ খান
তথ্যসূত্র: ওয়েবসাইট
dainik prothom alo
No comments:
Post a Comment