ভারতের সঙ্গে সাত হাজার কোটি টাকার ঋণসহায়তা চুক্তি নিয়ে বিএনপির সমালোচনার জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি সরকার এর চেয়ে বেশি হারে সুদের বিনিময়ে ভারতের সঙ্গে ঋণচুক্তি করেছিল। গতকাল মঙ্গলবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির নবনির্বাচিত কার্যকরী সংসদের প্রতিনিধিদল তাঁর কার্যালয়ের দেখা করতে গেলে তিনি এসব কথা বলেন। বাসস।
শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার দেশের অর্থনীতির বিকাশ ও জনগণের কল্যাণে ১ দশমিক ৭৫ শতাংশের কম সুদে ঋণচুক্তি করেছে। আর বিএনপি ৫ শতাংশ সুদে ভারতের সঙ্গে ১৫ বছর মেয়াদি ঋণচুক্তি করেছিল। তিনি বলেন, এই অর্থ দিয়ে রেল ও যোগাযোগ খাতের অবকাঠামো এবং বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে ব্যয় করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঋণের অর্থ দিয়ে পানিসম্পদ ও নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের জন্য ছয়টি ড্রেজার ক্রয়, আশুগঞ্জ অভ্যন্তরীণ কনটেইনার নৌবন্দর স্থাপন, বাংলাদেশ রেলওয়ের ১০টি ব্রডগেজ লোকোমোটিভ, ১২৫টি ব্রডগেজ যাত্রীবাহী কোচ, জ্বালানি তেল পরিবহনের জন্য ৬০টি ট্যাংক ওয়াগন ও দুটি ব্রেক ভ্যান সংগ্রহ এবং কনটেইনার পরিবহনের জন্য ৫০টি মিটারগেজ ফাট ওয়াগন ও পাঁচটি ব্রেক ভ্যান সংগ্রহ, রেলওয়ে অ্যাপ্রোচসহ দ্বিতীয় ভৈরব ও দ্বিতীয় তিতাস সেতুর নির্মাণ, বিআরটিসির জন্য ৩০০টি ডবল ডেকার এসি-নন এসি বাস ও ৫০টি আর্কিকুলেটেড বাস সংগ্রহ, সরাইল-ব্রাহ্মণবাড়িয়া-সুলতানপুর-চিনইর-আখাউড়া-সেনারবাদী স্থলবন্দর সড়ক জাতীয় মহাসড়কে উন্নীতকরণ প্রকল্প, জুরাইন রেলক্রসিংয়ে ওভারপাস ও মালিবাগ রেলক্রসিংয়ে ফ্লাইওভার নির্মাণ প্রকল্প, রামগড়-সাবরুম স্থলবন্দর সংযোগ সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প, বাংলাদেশের ভেড়ামারা ও ভারতের বহরমপুরের মধ্যে ৪০০ কেভি গ্রিড আন্তঃসংযোগ প্রতিষ্ঠা এবং বিএসটিআইর চারটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী জোট আমলে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি কয়লা উত্তোলনের ব্যাপারে চীনের সঙ্গে ৪ দশমিক ৫০ শতাংশ হারে ঋণচুক্তির কথা উল্লেখ করেন। ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নির্ধারণের বিষয়টি জাতিসংঘে উত্থাপনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এ ব্যাপারে ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সরকারের আলোচনা চলছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি ভারতের সঙ্গে পুশব্যাক চুক্তি করেছিল। বিএনপির নেত্রী নিজেই বলেছিলেন, ভারতের সঙ্গে আলোচনাকালে গঙ্গার পানি নিয়ে কথা বলতে তিনি ভুলে গিয়েছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেন, দেশকে মেধাশূন্য করতে জোট সরকার দলীয়করণ এবং সন্ত্রাসের মাধ্যমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিল। দেশের শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নে সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী কাউকে রেহাই দেওয়া হবে না। শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখার জন্য শিক্ষকদের সহযোগিতা কামনা করেন।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির প্রতিনিধিদলে সমিতির সভাপতি মো. আজিজুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক আনন্দ কুমারের নেতৃত্বে আরও ছিলেন এম আনসার উদ্দীন, মো. সুলতান-উল-ইসলাম প্রমুখ।
প্রথম আলো ডেস্ক তারিখ: ১১-০৮-২০১০
No comments:
Post a Comment