
দেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কত? সরকারের কাছে জানতে চেয়েছেন উচ্চ আদালত। একই সঙ্গে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে কেন প্রয়োজনীয় ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হবে না, সে মর্মে সরকারের প্রতি রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন। দেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারে উদ্বেগ প্রকাশ করে হাইকোর্ট বলেছেন, 'এক শিশু, এক পরিবার' ধারণাটি কার্যকরের সময় এসে গেছে। আদালত আরও বলেন, জনসংখ্যা যে হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে আরও আগে এ বিষয়টি আদালতের নজরে আনা উচিত ছিল। দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে সরকারের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশনা চেয়ে চার আইনজীবী মনজিল মোরশেদ, সারোয়ার আহাদ চৌধুরী, আসাদুজ্জামান সিদ্দিকী ও তপন কুমার দাস জনস্বার্থে গত ৮ আগস্ট হাইকোর্টে এই রিট দায়ের করেন।
আদালত গ্রাম ও শহরের অতিরিক্ত জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে পৃথক ও স্বাধীন মন্ত্রণালয় গঠন করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তাও জানতে চান। পাশাপাশি জনসংখা নিয়ন্ত্রণে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থা কী কাজ করেছে তার তথ্য জানাতে বলা হয়। আদালত আরও জানতে চান, দেশে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে গত দশ বছরে কত অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
শুনানিতে অংশ নিয়ে রিটকারীদের পক্ষের কেঁৗসুলি ব্যারিস্টার মোকছেদুল ইসলাম বলেন, দেশে যত সমস্যা আছে তার মধ্যে মূল সমস্যা হচ্ছে জনসংখ্যা বৃদ্ধি। এই জনসংখ্যা বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে আমাদের জাতীয় জীবনের কোনো সমস্যাই সমাধান হবে না। এ কারণে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন সবার চিন্তাভাবনা করা দরকার, যে কোনোভাবেই হোক জনসংখ্যা বিস্ফোরণ
প্রতিরোধ করতে হবে। বর্তমান পরিবার পরিকল্পনা নিয়ন্ত্রণের নীতিমালা অনুযায়ী দুটি সন্তানই যথেষ্ট- এই স্নোগান পরিবর্তন করতে হবে। বর্তমানে করা যায় 'একটি সন্তান যথেষ্ট'। এটা করা না হলে আগামী ৩০/৪০ বছর পরে আমাদের বসবাস করার মতো জায়গা থাকবে না। রাজধানীসহ অন্যান্য শহর পরিত্যক্ত হয়ে যাবে।
শুনানি শেষে আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, অর্থ সচিব, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, আইন সচিব ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের মহাপরিচালকসহ ১৫ জনকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। রিট আবেদনটি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আদালত আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী মুজিবুর রহমান ফকির সমকালকে বলেন, দেশের অন্যতম প্রধান সমস্যাই হচ্ছে জনবিস্ফোরণ। এতে কোনো সন্দেহ নেই। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা ও মোকাবেলা কার্যক্রমে গতি আনতে সরকার পৃথক মন্ত্রণালয় করার কথা ভাবছে বলেও তিনি জানান। তিনি বলেন, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণই মূল কাজ নয়, বর্তমানে যে সংখ্যা আছে, তার ব্যবস্থাপনা নিয়ে পরিকল্পনা করতে হবে। তা না হলে জনসংখ্যা বৃদ্ধির লাগাম টেনে ধরা যাবে না।
জনসংখ্যা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে জনসংখ্যাই এখন প্রধান সমস্যা। আন্তর্জাতিক সংস্থানির্ভর পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রম 'ছেলে হোক মেয়ে হোক_ দুটি সন্তানই যথেষ্ট' এ স্লোগান ব্যর্থ হয়েছে। এখন একটি সন্তানের স্নোগান দিতে হবে। মানুষ বাড়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কমছে ফসলি জমি। বাড়ছে খাদ্য ঘাটতি। শুধু খাদ্য উৎপাদনে নয়, জনসংখ্যা বৃদ্ধির চাপ পড়ছে বাসস্থান, শিক্ষা ও কর্মসংস্থানসহ দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে।
বিশ্বব্যাংকের হিসাব মতে, বর্তমানে বাংলাদেশে জনসংখ্যা হলো ১৬ কোটি ৪৪ লাখ। যদিও এই সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক আছে সংশ্লিষ্ট মহলে। যুক্তরাষ্ট্রভিক্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান পপুলেশন কাউন্সিলের সর্বশেষ গবেষণা তথ্য মতে, বছরে ২৫ লাখ করে বাড়তি জনসংখ্যা যোগ হচ্ছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে ২০৩৭ সালে বাংলাদেশের জনসংখ্যা হবে ২১ কোটি। এদিকে সচেতনতা বৃদ্ধি ও মানুষের কাছে জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী পেঁৗছে দেওয়ার কাজটি গতি হারিয়েছে। এ ছাড়াও পরিবার পরিকল্পনা দফতরের জনবল সংকট, অদূরদর্শী পরিকল্পনা, ক্যাডার-নন-ক্যাডার দ্বন্দ্ব ও দাতা সংস্থার আন্তরিকতার অভাবে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম একপ্রকার ঝিমিয়ে পড়েছে। সরকার এখনই এ বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ না নিলে জনসংখ্যা সমস্যা বড় ধরনের বিপদ ডেকে আনবে বাংলাদেশের জন্য। এ বিষয়ে খাদ্যমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাকও দ্বিমত পোষণ করেননি। তিনি সমকালকে বলেন, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে আনা না গেলে সব উন্নয়ন পরিকল্পনাই ভেস্তে যাবে।
জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট- নিপোর্টের এক গবেষণায় দেখা গেছে, জন্মনিয়ন্ত্রণ প্রদ্ধতিগুলোর মধ্যে শুধু মহিলাদের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। পুরুষদের এ কার্যক্রমে যুক্ত করা না গেলে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ অসম্ভব হবে। শিশুমৃত্যুর হার কমে যাওয়া পুত্রসন্তানের প্রতি আগ্রহ ও মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধির কারণেও জনসংখ্যা বাড়ছে বলে ওই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। এ সমস্যাগুলো দূর করা গেলে জনসংখ্যার হার এক ভাগে নামিয়ে আনা সম্ভব বলে মনে করেন পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের পরিচালক।
স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের হিসাবে ২০০৮ সালের মাঝামাঝি দেশে জনসংখ্যা ছিল ১৪ কোটি ছয় লাখ এবং বার্ষিক জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল ১ দশমিক ৪১ শতাংশ। জাতিসংঘ বলছে, বাংলাদেশে জনসংখ্যা আরও বেশি। জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) ২০০৮ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০৬ সালে বাংলাদেশের জনসংখ্যা ছিল ১৫ কোটি ৬০ লাখ এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল দুই শতাংশ। সরকারি হিসাবে প্রতি বছর মোট জনসংখ্যার সঙ্গে ২০ লাখ যুক্ত হচ্ছে। জাতিসংঘের মতে, এ সংখ্যা ৩১ লাখ আর এনজিওদের তথ্য মতে তা ২৫ লাখ। সর্বশেষ জনসংখ্যা ও স্বাস্থ্য জরিপের তথ্য মতে, সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় আছে সিলেট ও চট্রগ্রাম বিভাগ। সিলেটে একজন নারী গড়ে ৪ দশমিক ২টি এবং চট্টগ্রামে ৩ দশমিক ৭টি সন্তান জন্ম দেন। মানুষ বৃদ্ধির বর্তমান জাতীয় গড় হচ্ছে ২ দশমিক ৭ শতাংশ। জাপানে এ হার শূন্য, থাইল্যান্ডে শূন্য দশমিক ৭, শ্রীলংকায় শূন্য দশমিক ৫, চীনে শূন্য দশমিক ৬। অস্ট্রেলিয়া আয়তনে বাংলাদেশের চেয়ে ৬৫ গুণ বেশি। তাদের জনসংখ্যা হচ্ছে ২ কোটি ২৩ লাখ। আমেরিকার জনসংখ্যা ৩০ কোটি ৯২ লাখ। অথচ পৃথিবীর সব মানুষের ঠাঁই মিলবে আমেরিকার দুই-তৃতীয়াংশ আয়তনে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য মতে, দেশে এখন জনসংখ্যা ১৪ কোটি। গত ১৪ জানুয়ারি জাতিসংঘ শিশু তহবিল ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, দেশে জনসংখ্যা হচ্ছে সাড়ে ১৫ কোটি। বর্তমান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ তার নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষণা দিয়ে ছিল ২০২১ সালের মধ্যে দেশের জনসংখ্যা সাড়ে ১৬ কোটির মধ্যে রাখা হবে। কিন্তু ইতিমধ্যে তা অতিক্রম করেছে বলে অনেকেই বলছেন। সরকার বলছে, তারা এ লক্ষ্যে ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে। রেটিং দিন :
আদালত গ্রাম ও শহরের অতিরিক্ত জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে পৃথক ও স্বাধীন মন্ত্রণালয় গঠন করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তাও জানতে চান। পাশাপাশি জনসংখা নিয়ন্ত্রণে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থা কী কাজ করেছে তার তথ্য জানাতে বলা হয়। আদালত আরও জানতে চান, দেশে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে গত দশ বছরে কত অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
শুনানিতে অংশ নিয়ে রিটকারীদের পক্ষের কেঁৗসুলি ব্যারিস্টার মোকছেদুল ইসলাম বলেন, দেশে যত সমস্যা আছে তার মধ্যে মূল সমস্যা হচ্ছে জনসংখ্যা বৃদ্ধি। এই জনসংখ্যা বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে আমাদের জাতীয় জীবনের কোনো সমস্যাই সমাধান হবে না। এ কারণে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন সবার চিন্তাভাবনা করা দরকার, যে কোনোভাবেই হোক জনসংখ্যা বিস্ফোরণ
প্রতিরোধ করতে হবে। বর্তমান পরিবার পরিকল্পনা নিয়ন্ত্রণের নীতিমালা অনুযায়ী দুটি সন্তানই যথেষ্ট- এই স্নোগান পরিবর্তন করতে হবে। বর্তমানে করা যায় 'একটি সন্তান যথেষ্ট'। এটা করা না হলে আগামী ৩০/৪০ বছর পরে আমাদের বসবাস করার মতো জায়গা থাকবে না। রাজধানীসহ অন্যান্য শহর পরিত্যক্ত হয়ে যাবে।
শুনানি শেষে আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, অর্থ সচিব, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, আইন সচিব ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের মহাপরিচালকসহ ১৫ জনকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। রিট আবেদনটি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আদালত আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী মুজিবুর রহমান ফকির সমকালকে বলেন, দেশের অন্যতম প্রধান সমস্যাই হচ্ছে জনবিস্ফোরণ। এতে কোনো সন্দেহ নেই। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা ও মোকাবেলা কার্যক্রমে গতি আনতে সরকার পৃথক মন্ত্রণালয় করার কথা ভাবছে বলেও তিনি জানান। তিনি বলেন, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণই মূল কাজ নয়, বর্তমানে যে সংখ্যা আছে, তার ব্যবস্থাপনা নিয়ে পরিকল্পনা করতে হবে। তা না হলে জনসংখ্যা বৃদ্ধির লাগাম টেনে ধরা যাবে না।
জনসংখ্যা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে জনসংখ্যাই এখন প্রধান সমস্যা। আন্তর্জাতিক সংস্থানির্ভর পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রম 'ছেলে হোক মেয়ে হোক_ দুটি সন্তানই যথেষ্ট' এ স্লোগান ব্যর্থ হয়েছে। এখন একটি সন্তানের স্নোগান দিতে হবে। মানুষ বাড়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কমছে ফসলি জমি। বাড়ছে খাদ্য ঘাটতি। শুধু খাদ্য উৎপাদনে নয়, জনসংখ্যা বৃদ্ধির চাপ পড়ছে বাসস্থান, শিক্ষা ও কর্মসংস্থানসহ দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে।
বিশ্বব্যাংকের হিসাব মতে, বর্তমানে বাংলাদেশে জনসংখ্যা হলো ১৬ কোটি ৪৪ লাখ। যদিও এই সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক আছে সংশ্লিষ্ট মহলে। যুক্তরাষ্ট্রভিক্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান পপুলেশন কাউন্সিলের সর্বশেষ গবেষণা তথ্য মতে, বছরে ২৫ লাখ করে বাড়তি জনসংখ্যা যোগ হচ্ছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে ২০৩৭ সালে বাংলাদেশের জনসংখ্যা হবে ২১ কোটি। এদিকে সচেতনতা বৃদ্ধি ও মানুষের কাছে জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী পেঁৗছে দেওয়ার কাজটি গতি হারিয়েছে। এ ছাড়াও পরিবার পরিকল্পনা দফতরের জনবল সংকট, অদূরদর্শী পরিকল্পনা, ক্যাডার-নন-ক্যাডার দ্বন্দ্ব ও দাতা সংস্থার আন্তরিকতার অভাবে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম একপ্রকার ঝিমিয়ে পড়েছে। সরকার এখনই এ বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ না নিলে জনসংখ্যা সমস্যা বড় ধরনের বিপদ ডেকে আনবে বাংলাদেশের জন্য। এ বিষয়ে খাদ্যমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাকও দ্বিমত পোষণ করেননি। তিনি সমকালকে বলেন, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে আনা না গেলে সব উন্নয়ন পরিকল্পনাই ভেস্তে যাবে।
জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট- নিপোর্টের এক গবেষণায় দেখা গেছে, জন্মনিয়ন্ত্রণ প্রদ্ধতিগুলোর মধ্যে শুধু মহিলাদের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। পুরুষদের এ কার্যক্রমে যুক্ত করা না গেলে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ অসম্ভব হবে। শিশুমৃত্যুর হার কমে যাওয়া পুত্রসন্তানের প্রতি আগ্রহ ও মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধির কারণেও জনসংখ্যা বাড়ছে বলে ওই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। এ সমস্যাগুলো দূর করা গেলে জনসংখ্যার হার এক ভাগে নামিয়ে আনা সম্ভব বলে মনে করেন পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের পরিচালক।
স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের হিসাবে ২০০৮ সালের মাঝামাঝি দেশে জনসংখ্যা ছিল ১৪ কোটি ছয় লাখ এবং বার্ষিক জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল ১ দশমিক ৪১ শতাংশ। জাতিসংঘ বলছে, বাংলাদেশে জনসংখ্যা আরও বেশি। জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) ২০০৮ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০৬ সালে বাংলাদেশের জনসংখ্যা ছিল ১৫ কোটি ৬০ লাখ এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল দুই শতাংশ। সরকারি হিসাবে প্রতি বছর মোট জনসংখ্যার সঙ্গে ২০ লাখ যুক্ত হচ্ছে। জাতিসংঘের মতে, এ সংখ্যা ৩১ লাখ আর এনজিওদের তথ্য মতে তা ২৫ লাখ। সর্বশেষ জনসংখ্যা ও স্বাস্থ্য জরিপের তথ্য মতে, সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় আছে সিলেট ও চট্রগ্রাম বিভাগ। সিলেটে একজন নারী গড়ে ৪ দশমিক ২টি এবং চট্টগ্রামে ৩ দশমিক ৭টি সন্তান জন্ম দেন। মানুষ বৃদ্ধির বর্তমান জাতীয় গড় হচ্ছে ২ দশমিক ৭ শতাংশ। জাপানে এ হার শূন্য, থাইল্যান্ডে শূন্য দশমিক ৭, শ্রীলংকায় শূন্য দশমিক ৫, চীনে শূন্য দশমিক ৬। অস্ট্রেলিয়া আয়তনে বাংলাদেশের চেয়ে ৬৫ গুণ বেশি। তাদের জনসংখ্যা হচ্ছে ২ কোটি ২৩ লাখ। আমেরিকার জনসংখ্যা ৩০ কোটি ৯২ লাখ। অথচ পৃথিবীর সব মানুষের ঠাঁই মিলবে আমেরিকার দুই-তৃতীয়াংশ আয়তনে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য মতে, দেশে এখন জনসংখ্যা ১৪ কোটি। গত ১৪ জানুয়ারি জাতিসংঘ শিশু তহবিল ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, দেশে জনসংখ্যা হচ্ছে সাড়ে ১৫ কোটি। বর্তমান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ তার নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষণা দিয়ে ছিল ২০২১ সালের মধ্যে দেশের জনসংখ্যা সাড়ে ১৬ কোটির মধ্যে রাখা হবে। কিন্তু ইতিমধ্যে তা অতিক্রম করেছে বলে অনেকেই বলছেন। সরকার বলছে, তারা এ লক্ষ্যে ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে। রেটিং দিন :
dainik samokal13-08-2010
No comments:
Post a Comment